Thursday, May 30, 2019

মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া-র কবিতা





|| সম্পর্ক-১||

এত বেশি শীত,বরফে ঢেকে গেছে মুখের দেওয়াল
সবুজ পশমের দেশে দেখি ঢাল বেয়ে নেমে আসছে ভেড়ার পাল
পাতা কুড়োই।
ছোট ছোট কথা আর আদরের
ঝরে যাওয়া  হেমন্তে জ্বালবো না মুহুর্ত বলো?
পাতা পোড়ানোর গন্ধে দেখবো না গলে যাচ্ছে দূরের বরফ
আর ঝোরা নামছে গালের উপত্যকায়
ও জলে নৌকো হারায়
বরাবর নৌকো ডোবে স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে
এত চাঁদ, নীল ডানা,মধুভর্তি এত মৌচাক
পাক খায় ও  ঘুর্ণিজলে
আমি বারবার ফেরাতে চাই শীতকাল থেকে
তাকাও,পাশ ফেরো,ঘুমের দিকে আমার
দ‍্যাখো কথাদের গায়ে কত আদরের দাগ
তাকাও,আর পাতা পোড়ানোর সুবাসে
ভরে যাক আমাদের সব শীতকাল



 || সম্পর্ক-২ ||

একদিন স্রেফ বেপাত্তা হয়ে গেল সময়
ঘুম ভেঙে তখনও বিশ্বাস হয়নি
আছে নিশ্চই  কোথাও
মুহূর্তরা জানি লেগে থাকে চোখের পাতায়
অচেনা কাঠের সিঁড়ি,টবের বারান্দায় 
ভুল ভেবে ওঠানামা করি
ভাবি দরজা খুললেই ভালো লেগে যাবে
পাহাড়ি ফুলের দিন, জুনিপার গাছ
অথচ ফিরেতো আসতেই হয়
রুকস‍্যাক ভারি হয়ে যায় সমতলে
আমি তাও ধুপিবন বিশ্বাস করি
দেবদারু পাতা রাখি বইয়ের ভাঁজে
ধারালো পেজমার্ক বিঁধে গেলে হৃৎপিণ্ডে
 কালচে মেরুন রসে ভারি হয় বই
রঙের গোছা হাতে এ শহরে দৌড়ে আসে শীত
বার্চের শিরশিরে হাওয়া নিয়ে আসে 
ধুলোমাখা বইয়ের তাকে ঘুম ভেঙ্গে দেখি
পাতা থেকে উবে গেছে শুকনো আতর
বরফ পড়েছে খুব বইয়ের ভেতর
এতটুক চিহ্ন নেই সময়ের
সম্পর্ক বলে যাকে শুরু করা যায়….


|| রান্নাঘর||

থলেভর্তি আনাজ নিয়ে বাড়ি ফেরে যেসব খবর
চাঁদের তলায় লবণ আর মধু বয়ে বেড়ায়
জানে খিদের জন্য অপেক্ষা করে ফুলো ফুলো রুটি
রান্না করা খাবারও ঢাকা উল্টে দ‍্যাখে
 ডিপফ্রিজে ছটফট করে বরফের মন
পুরোটা না গলে শান্তি নেই যেন
চায়,আগুনের ছুরিতে ফালাফালা হোক জল
মুহুর্তরা গরম হয়ে উঠুক 
টগবগ করুক উনুনে আর
 সুগন্ধি ভাঁপ উড়ুক নোনতা ঝোলের
ক‍্যালেন্ডারে বরফের নদী লক্ষ্য রাখে
থালা ঘিরে খেতে বসলেই
জলশব্দে,বীজশব্দে কলকলিয়ে ওঠে রান্নাঘর….


No comments:

Post a Comment

একঝলকে

ভেঙে যাওয়ার পরে- একটি উপন্যাসের পাঠপ্রতিক্রিয়া- রিমি মুৎসুদ্দি

  ‘মৃত্যুতে শোক থাকে কিন্তু সামাজিক অপযশ থাকে না । ’ ‘ মৃত্যু ’ ‘ শোক ’ ‘ অপযশ ’- একটা গোটা উপন্যাস থেকে এই তিনটে শব্দই কেন...

পছন্দের ক্রম