লীনতাপ
আবৃত্তি শ্রবণের নেশায় বুঁদ
হয়ে পড়েছিল
আমার কচি বয়স; শ্রুতিনান্দনিক স্বর ঠেলে
তুমি কি অপূর্ব উপভোগ ছড়িয়ে
রাখতে সন্ধ্যায়,
সরল দে'র ছড়ায়, ভবানীপ্রসাদ শঙ্খ ঘোষে---
কোচিং-ফেরত অস্থির সদ্য কেনা বাই-সাইকেল
ঢুকে যেত তোমাদের
অপেক্ষাকৃত নির্জন পাড়া;
রবিঠাকুরের 'ছুটি' শেষ হয়েও হইল না যেন
হঠাৎই 'বীরপুরুষ' এসে উদ্যম বাড়িয়ে দেয়,
মনোবাষ্পের গুমোট 'লিচুচোর'
'দামোদর শেঠ'
যেভাবে গুম করে দিয়েছিল
আজও তা অনন্য লাগে...
মাটির কুঁজোয় শ্রুতি ভরে
আমি প্রতিটি সন্ধ্যায়
টলমল করে ফিরতাম, আগামীকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত
সাপুড়িয়ার বীণের মতো
অক্লান্ত বাজাতে তুমি...
কুঁজো থেকে লীন তাপ ত্যাগ
করে ক্রমশ শীতল
হতে হতে বুঝেছি ভেতরে
উন্মেষ-বয়স ডালে
থোকা থোকা প্রশান্তির কুঁড়ি
ব্রণর মতো গজাচ্ছে;
ফুলের সাজসজ্জায় ভরে
যাচ্ছে দূর ভবিষ্যৎ,
আবৃত্তির ঘর-বাড়ি, ছড়া ও কবিতার শাদ্বল---
তবে সবকিছু ছাপিয়ে তোমার
কণ্ঠে শেষ আবৃত্তি
টিকাকরণের মতো চিরস্থায়ী
দাগ রেখে গেছে---
'কলঘরে চিলের কান্না' শেষে তোমাদের বাড়ি বিক্রি,
ক্যান্সারাক্রান্ত তোমার
পিতা গদ্য চিনিয়েছিলেন...
No comments:
Post a Comment