Thursday, May 30, 2019

নভেরা হোসেনের কবিতা






একটা দুটো তারা ঝরছে এরকম দিনে

একটা দুটো তারা ঝরছে এরকম দিনে তুমি এলে
বৃষ্টির নহর বইয়ে দিলে
একটা ভেজা কাক জানালার কার্নিশে
একটা ছেঁড়া পাতা বাতাসে উড়ছে
সব কিছু ঘড়ির কাঁটায়
মাথা থেকে খুলে নিলে হেয়ার ক্লিপ
ঝর্ণাজলে  নিবিড় স্নান
একটা সুগন্ধির মতো ভেসে বেড়াচ্ছ বাতাসে
হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় না
এ কেমন ভাবালুতা
জ্যৈষ্ঠের  শেষবেলা আকাশের সানুদেশে
কালো ছাতা হয়ে ঝুলছ
একটা কাঁটা চামচ হয়ে গেঁথে আছো
পৃথিবীর হৃদপিণ্ডে


জানালা দিয়ে যতদূর দেখা যায় 

দূরে সারি করে দাঁড়ানো ইমারত
কোনটা সাদা রঙের, কোনটা নীল, কোনটা ধূসর
বাড়িগুলোর ছাদে কাপড় ঝুলছে
কয়েকটা দোকান বাড়িগুলোর নিচের তলায়
দূর থেকে দেখা যাচ্ছে বোরখা-পরা দুজন মেয়ে
পাশে সাদা শার্টের  ভদ্রলোক
এক ঝাঁক কাক উড়ে পাশের ছাদে বসলো
সেখানে তারা কিছু খুঁটে খাচ্ছে
ঝিরঝিরে একটা বাতাস বয়ে যাচ্ছে
জানালায় কমলা-হলুদ পর্দা উড়তে লাগলো
জানালা দিয়ে মাঠ দেখা যাচ্ছে
ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে 
একদল লোক পাশের রাস্তা দিয়ে চলে যাচ্ছে
ভ্যানে করে ফল বিক্রি করছে ফেরিওয়ালারা
একটা ছোট মেয়ে সাদা ফ্রক পড়ে হাতে বেলুন নিয়ে যাচ্ছে
তুমিও জানালার পর্দা টেনে দিলে
সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামবে বলে 




জলে ডোবা চাঁদ

গোধূলি ম্লান হয়ে আসছে
ইঁদুরেরা গর্তে লুকালো
সব পাখি, সরীসৃপ
বাড়িতে বাড়িতে বিজলি বাতি
চাঁদ আজ আকাশ জুড়ে
ছাদের ব্যালকনিতে  মাধবীলতা
তোমার মন আজ বিষণ্ণ
চায়ে ডুবিয়ে নোনতা বিস্কুট
খাঁচার পাখিরা কিচির-মিচির ডাকছে
চাঁদ ডুবে গেলো
জলে ডোবা চাঁদ
রাতের দ্বিপ্রহর শুরু হলো
গ্রান্ডফাদার ক্লকে ঘন্টা বাজছে 

চাঁদ ডুবে গেলো
কুয়ার জলে ডোবা চাঁদ
কত দিন নদীতে যাই না
পাহাড়ে সমুদ্রে
একটা প্রস্তরখণ্ড ভেসে যাচ্ছে বাতাসে
বাতাস এখানে ভারি
শিউলির কমলা ঠোঁট
ঝরে পড়ছে চাতালের ওপারে
চাঁদ আজ ডুবে গেলো
তুমি ছুঁতে পারলে না আজকের চাঁদ








No comments:

Post a Comment

একঝলকে

ভেঙে যাওয়ার পরে- একটি উপন্যাসের পাঠপ্রতিক্রিয়া- রিমি মুৎসুদ্দি

  ‘মৃত্যুতে শোক থাকে কিন্তু সামাজিক অপযশ থাকে না । ’ ‘ মৃত্যু ’ ‘ শোক ’ ‘ অপযশ ’- একটা গোটা উপন্যাস থেকে এই তিনটে শব্দই কেন...

পছন্দের ক্রম