।।ঘর।।
১.
গরম ভাতের থালার
গন্ধে
যে বাড়িতে
গন্ধরাজ জন্মায়
তার জানালার রঙ
কলমিশাক।
সে বাড়িতে একফালি
কুমড়োর বুক ঠেলে
বেরিয়ে আসে
প্রতিপদের চাঁদ।
নিষ্পন্দন।
উচ্চাশা খেলে যায়
কাঠ ফাটা ঝিঙে মাচায়।
ভাগচাষ;
সুখচাষ।
উঠোন জুড়ে পড়ে
থাকে
ভাঙা মাদুর কাঠি,
টুকটুকির শুকনো
দুটো চোখ,
মায়ের ছেঁড়া
আঁচল।
২.
এরপর কোনদিন অসুখ
করলে
অন্ধকার নেমে আসে
চারপাশে
স্ট্রিটলাইট আর
পূর্নিমার চাঁদ
জ্বলতে থাকে একই
রকম ভাবে।
আমি শুয়ে থাকি
উদাত্ত কাতরতায়
ঠোঁটে ফাটল ধরে,
হাত পায়ের চামড়া
ওঠে।
পর্ণমোচী খেলা।
কারা যেন আসে
আবার চলেও যায়-
নিরুত্তর।
৩.
পাশাপাশি দুটি
বাড়ির ছায়া পড়ে লম্বা হয়ে
তারপর মিশে যায়
সূর্যের পাহারায়।
বাসনওয়ালা চলে
যায় দুধ সাদা গাড়ির পাশ দিয়ে-
রোজ দিন।
একটি বাঁশিওয়ালা
সারা দুপুর ধরে শোনায়
'চিঙ্গারি কোই ভড়কে......’
চারিদিকে ধুলো
উড়ে ঢাকা পড়ে যায়
সুখ দুঃখের
চুম্বনদৃশ্য।
গুটি মেরে বসে
থাকা নেড়িকুকুরগুলো
একছুটে পার করে
আমার বাড়ি,
টুকটুকির বাড়ি
বড় রাস্তা,
ছোট রাস্তা
জঙ্গল,
মাঠ, ধূ ধূ প্রান্তর।
.....
..
আশ্রয়
.............
................ নীলম সামন্ত
আশ্চর্য্য রকমের
একটা শান্তিনিকেতন গড়ে উঠেছে
আমার জানালার
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা
রোদেলা জাম গাছের
ক্ষয় শূন্য সবুজ পাতার আড়ালে।
একটি কাক ঠোঁটে
করে ঘর জাগিয়ে তুলেছে।
বাতাসে গাছটি
দুলে উঠলে
সে এসে পা গুটিয়ে
বসে থাকে।
বসে থাকে আরও এক
সঙ্গী।
কিছুদিনের মধ্যে
কেউ মা হবে
হয়তো বা কেউ মা
হয়েছে।
আমি তাদের চোখ
দুটো দেখি
অখন্ড গীতবিতানের
মায়া।
না না কাকের গল্প
না
যেটা বলতে
চাইছিলাম সেটা 'ভালোবাসা' অথবা
'আশ্রয়'।
এ রাজ্যে
রবীন্দ্রনাথের কোন মূর্তি চোখে পড়েনি,
কিংবা কোন
রবীন্দ্রসংগীতও হঠাৎ করে ভেসে আসেনা,
অথচ আমার বালিশের
পাশে জেগে থাকে অখন্ড গীতবিতান।
কতশত ভালোবাসার
মৃত দেহ পেরিয়ে
এই দুর্নীতির
বেঁচে থাকা।
পিছিয়ে পড়া
বিধ্বস্ত অধ্যায়।
প্রচন্ড রোদের
বাহার অথচ আলো নেই।
প্রিয় আশ্রয় কেমন
আছেন আপনি?
বুকের ভেতর বেজে
ওঠে
'তুমি
সাধ করে নাথ, ধরা দিয়ে আমারও রঙ বক্ষে নিয়ো......'
No comments:
Post a Comment